ফলে পরিচয়
দরিদ্র রুমা বেগমের সংসারে অভাব-অনটন লেগেই থাকত। স্বামীর মুঠোফোনের রিচার্জের দোকানের সামান্য আয় দিয়ে কোনো রকমে চলত সংসার।সচ্ছলতা আনার উদ্যোগ নেন স্ত্রী রুমা বেগম। তাঁর বাবার বাড়িতে ছিল নার্সারি। সেখানে চারা তৈরির অভিজ্ঞতা ছিল রুমার। ২০০৭ সালে গয়না বিক্রি করে নিজেই শুরু করেন ছোট একটি নার্সারি। বনজ, ফলদ ও ভেষজ চারা উৎপাদন করে কয়েক বছরের মধ্যেই পান সাফল্য। নার্সারি করে সংসারের অভাব তাড়িয়েছেন। এবারে বৃক্ষরোপণে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার ২০১৪–এর জন্য নির্বাচিত হয়েছেন তিনি।
রুমা বেগমের বাড়ি পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার আরামকাঠী গ্রামে। স্বরূপকাঠী পৌরসভার জগৎপট্টি এলাকায় রয়েছে তাঁর আট একর জমির ওপর নার্সারি। প্রায় ২০০ প্রজাতির বনজ, ফলদ ও ভেষজ উদ্ভিদের চারা উৎপাদনের নার্সারি। প্রতিবছর নার্সারিতে তিন লাখ চারা উৎপাদিত হয়। সাত থেকে আটজন মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে রুমার নার্সারিতে।
আরামকাঠী গ্রামের মৃত আবদুল জব্বারেরমেয়ে রুমা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। পাঁচ বোন ও একভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট তিনি। অভাবের কারণেই বন্ধ হয়েছিল পড়াশোনা। বাবার ছোট পরিসরের নার্সারিতে তখন কাজ করতেন রুমা। ২০০৪ সালে তাঁর বিয়ে হয় একই গ্রামের মানিক হোসেনের সঙ্গে। স্বামীর সংসারেও সেই অভাব। রুমা সংসারের আয় বাড়াতে বাড়ির পাশে এক খণ্ড জমিতে গাছের চারা উৎপাদন শুরু করেন। চারা বিক্রির আয় থেকে সংসারের অভাব কিছুটা দূর হতে লাগল।
রুমা বললেন, ‘এরপর নার্সারিটা বড় করার সিদ্ধান্ত নিই। নিজের গয়না বিক্রির ২০ হাজার টাকা দিয়ে জগৎপট্টিতে শুরু করি বড় নার্সারি।’ এখন আট একর জমিতে রুমার নার্সারিতে রয়েছে ১৯ প্রজাতির বনজ, ৫৪ প্রজাতির ফলজ, ৭০ প্রজাতির শোভাবর্ধনকারী ফুলও ৪৪ প্রজাতির ভেষজ উদ্ভিদের চারা। এ ছাড়া নার্সারিতে রয়েছে বিলুপ্তপ্রায় অশোক, আমুর, পিপুল, আঁশফল, উলটচণ্ডাল কর্পূরসহ নয় প্রজাতির চারা। প্রতিবছর নার্সারি থেকে আয় করছেন তিন থেকে চার লাখ টাকা।
‘নার্সারি যখন শুরু করি, হাতে তেমন একটা টাকাপয়সা ছিল না। শ্রমিক দিয়ে কাজ করানোর মতো অবস্থা না থাকায় স্বামী-স্ত্রী মিলে কাজ করতাম। আমার নার্সারিটা ছিল রাস্তার পাশে। গভীর রাত পর্যন্ত নার্সারিতে কাজ করতাম। তিল তিল করে গড়ে তুলেছি নার্সারি। এখন অভাব নেই। দুই মেয়ে নিয়ে সুখে আছি। বড় মেয়ে প্রথম শ্রেণিতে পড়ে। আমি নিজে লেখাপড়া করতে পারিনি। ইচ্ছে আছে মেয়েদের লেখাপড়া করাব।’ বলেন রুমা। বৃক্ষরোপণে প্রধানমন্ত্রীর পুরস্কার পাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পুরস্কার পাওয়ার খবর শুনে কষ্টের কথা ভুলে গেছি।’
নিজের নার্সারিতে রুমাস্ত্রীর সাফল্যে মানিক হোসেনও খুশি। মানিক হোসেন বললেন, ‘ওর বুদ্ধিমত্তা আর সাহস আমাদের সংসারের সচ্ছলতা এনে দিয়েছে।’
নেছারাবাদ উপজেলা বন কর্মকর্তা দীপঙ্কর রায় বলেন, বৃক্ষরোপণ প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার ২০১৪ ব্যক্তিগত নার্সারি বিভাগে রুমা বেগম দ্বিতীয় পুরস্কার পেয়েছেন। এ-সংক্রান্ত চিঠি পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় থেকে পেয়েছি। ৩০ জুলাই প্রধানমন্ত্রী ঢাকায় এ পুরস্কার প্রদান করবেন।’
কঠোর পরিশ্রমই রুমা বেগমকে সফল নারী উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে। পরিশ্রমের ফল হিসেবেই পাচ্ছেন সফলতা আর জাতীয় পুরস্কার।
দরিদ্র রুমা বেগমের সংসারে অভাব-অনটন লেগেই থাকত। স্বামীর মুঠোফোনের রিচার্জের দোকানের সামান্য আয় দিয়ে কোনো রকমে চলত সংসার।সচ্ছলতা আনার উদ্যোগ নেন স্ত্রী রুমা বেগম। তাঁর বাবার বাড়িতে ছিল নার্সারি। সেখানে চারা তৈরির অভিজ্ঞতা ছিল রুমার। ২০০৭ সালে গয়না বিক্রি করে নিজেই শুরু করেন ছোট একটি নার্সারি। বনজ, ফলদ ও ভেষজ চারা উৎপাদন করে কয়েক বছরের মধ্যেই পান সাফল্য। নার্সারি করে সংসারের অভাব তাড়িয়েছেন। এবারে বৃক্ষরোপণে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার ২০১৪–এর জন্য নির্বাচিত হয়েছেন তিনি।
রুমা বেগমের বাড়ি পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার আরামকাঠী গ্রামে। স্বরূপকাঠী পৌরসভার জগৎপট্টি এলাকায় রয়েছে তাঁর আট একর জমির ওপর নার্সারি। প্রায় ২০০ প্রজাতির বনজ, ফলদ ও ভেষজ উদ্ভিদের চারা উৎপাদনের নার্সারি। প্রতিবছর নার্সারিতে তিন লাখ চারা উৎপাদিত হয়। সাত থেকে আটজন মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে রুমার নার্সারিতে।
আরামকাঠী গ্রামের মৃত আবদুল জব্বারেরমেয়ে রুমা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। পাঁচ বোন ও একভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট তিনি। অভাবের কারণেই বন্ধ হয়েছিল পড়াশোনা। বাবার ছোট পরিসরের নার্সারিতে তখন কাজ করতেন রুমা। ২০০৪ সালে তাঁর বিয়ে হয় একই গ্রামের মানিক হোসেনের সঙ্গে। স্বামীর সংসারেও সেই অভাব। রুমা সংসারের আয় বাড়াতে বাড়ির পাশে এক খণ্ড জমিতে গাছের চারা উৎপাদন শুরু করেন। চারা বিক্রির আয় থেকে সংসারের অভাব কিছুটা দূর হতে লাগল।
রুমা বললেন, ‘এরপর নার্সারিটা বড় করার সিদ্ধান্ত নিই। নিজের গয়না বিক্রির ২০ হাজার টাকা দিয়ে জগৎপট্টিতে শুরু করি বড় নার্সারি।’ এখন আট একর জমিতে রুমার নার্সারিতে রয়েছে ১৯ প্রজাতির বনজ, ৫৪ প্রজাতির ফলজ, ৭০ প্রজাতির শোভাবর্ধনকারী ফুলও ৪৪ প্রজাতির ভেষজ উদ্ভিদের চারা। এ ছাড়া নার্সারিতে রয়েছে বিলুপ্তপ্রায় অশোক, আমুর, পিপুল, আঁশফল, উলটচণ্ডাল কর্পূরসহ নয় প্রজাতির চারা। প্রতিবছর নার্সারি থেকে আয় করছেন তিন থেকে চার লাখ টাকা।
‘নার্সারি যখন শুরু করি, হাতে তেমন একটা টাকাপয়সা ছিল না। শ্রমিক দিয়ে কাজ করানোর মতো অবস্থা না থাকায় স্বামী-স্ত্রী মিলে কাজ করতাম। আমার নার্সারিটা ছিল রাস্তার পাশে। গভীর রাত পর্যন্ত নার্সারিতে কাজ করতাম। তিল তিল করে গড়ে তুলেছি নার্সারি। এখন অভাব নেই। দুই মেয়ে নিয়ে সুখে আছি। বড় মেয়ে প্রথম শ্রেণিতে পড়ে। আমি নিজে লেখাপড়া করতে পারিনি। ইচ্ছে আছে মেয়েদের লেখাপড়া করাব।’ বলেন রুমা। বৃক্ষরোপণে প্রধানমন্ত্রীর পুরস্কার পাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পুরস্কার পাওয়ার খবর শুনে কষ্টের কথা ভুলে গেছি।’
নিজের নার্সারিতে রুমাস্ত্রীর সাফল্যে মানিক হোসেনও খুশি। মানিক হোসেন বললেন, ‘ওর বুদ্ধিমত্তা আর সাহস আমাদের সংসারের সচ্ছলতা এনে দিয়েছে।’
নেছারাবাদ উপজেলা বন কর্মকর্তা দীপঙ্কর রায় বলেন, বৃক্ষরোপণ প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার ২০১৪ ব্যক্তিগত নার্সারি বিভাগে রুমা বেগম দ্বিতীয় পুরস্কার পেয়েছেন। এ-সংক্রান্ত চিঠি পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় থেকে পেয়েছি। ৩০ জুলাই প্রধানমন্ত্রী ঢাকায় এ পুরস্কার প্রদান করবেন।’
কঠোর পরিশ্রমই রুমা বেগমকে সফল নারী উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে। পরিশ্রমের ফল হিসেবেই পাচ্ছেন সফলতা আর জাতীয় পুরস্কার।